ঢাকা: চ্যাম্পিয়নস লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিকটি করেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। গতকাল রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগেই বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে বার্সার ৪-১ গোলের জয়ে হ্যাটট্রিক করেন অধিনায়ক রাফিনিয়া।
ভিনিসিয়ুসের মতো তিনিও মূলত উইঙ্গার, চ্যাম্পিয়নস লিগেও এটা তার প্রথম হ্যাটট্রিক। এল ক্লাসিকোর আগে দুই শিবিরের এমন প্রস্তুতিই তো চাই!
লা লিগায় শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত একটায় মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। তার আগে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের পক্ষ থেকে দেখা গেল দুটি হ্যাটট্রিক।
বায়ার্নের বিপক্ষে প্রতিশোধ নিতে পারায় রিয়ালের মুখোমুখি হওয়ার আগে বার্সার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়তে পারে। ক্লাবটির হয়ে নিজের শততম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করা রাফিনিয়াই বলেছেন প্রতিশোধের কথা।
চ্যাম্পিয়নস লিগে বায়ার্নের বিপক্ষে সর্বশেষ টানা ছয় ম্যাচেই হেরেছিল বার্সা। এর মধ্যে ২০২০ সালে ৮-২ গোলের হার কাতালান ক্লাবটির সমর্থকদের জন্য ভুলে যাওয়া কঠিন। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে গতকাল রাতের জয় সেই হারের ক্ষত মোচনে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে। ম্যাচ শেষে ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়া সরাসরি বলেছেন, জার্মান ক্লাবটির কাছে নিকট অতীতের হারগুলো বিবেচনায় এই জয় বার্সার সমর্থকদের জন্য ‘প্রতিশোধ’।
এটা ভক্তদের কাছে প্রতিশোধ। আমরা খেলোয়াড়েরা অতীতে তাকাই না, লক্ষ্য থাকে পরের ম্যাচে। কিন্তু ভক্ত হিসেবে আমিও সেসব (হারের) ম্যাচে ভুগেছি।
বায়ার্নের কাছে টানা ছয় হারের দুটিতে মাঠে ছিলেন রাফিনিয়া। গতকাল রাতে অনেকটা ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলেই প্রথমার্ধে দুটি ও বিরতির পর একটি গোল আদায় করেন। শততম ম্যাচ হওয়ায় স্মারক জার্সি উপহার পাওয়ার পাশাপাশি শেষ বাঁশি বাজার পর তাকে নিয়ে আলাদা করে উদ্যাপনও করেছেন সতীর্থরা।
সব মিলিয়ে দারুণ এক রাতই কাটল এই ব্রাজিলিয়ানের। সেই আনন্দ এবং অতীত স্মরণ করেই রাফিনিয়া হয়তো বলেছেন, ‘এটা ভক্তদের কাছে প্রতিশোধ। আমরা খেলোয়াড়েরা অতীতে তাকাই না, লক্ষ্য থাকে পরের ম্যাচে। কিন্তু ভক্ত হিসেবে আমিও সেসব (হারের) ম্যাচে ভুগেছি।’
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে রাফিনিয়া বলেছেন, ‘ক্লাবের হয়ে শততম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করায় রাতটা অসাধারণ ও বিশেষ। দলের পারফরম্যান্স ও আমি যেভাবে খেলেছি, সেটা নিয়ে সন্তুষ্ট। ম্যাচের আগে বলেছিলাম, এটা হতে পারে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল। সবাই হয়তো এই কথা মানবে না, তবে ব্যাপারটা এমন কিছুই ছিল। তাই ভক্তদের সামনে এভাবে জিততে পারাটা বিশেষ কিছু এবং আমি খুব খুশি।’
২০০৮-০৯ মৌসুমে বায়ার্নকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল পেপ গার্দিওলার বার্সা। ২০১৪-১৫ মৌসুমেও বায়ার্নের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছিল লুইস এনরিকের বার্সা। দুবারই ‘ট্রেবল’ জিতেছিল কাতালান ক্লাবটি।
চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ গোলের পাশাপাশি ৬টি গোলে সহায়তা করেছেন রাফিনিয়া। বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচসেরার পুরস্কারটি তিনি নিজের ছেলের হাতে তুলে দেবেন বলে জানিয়েছেন, ‘এই পুরস্কার আমি আমার সন্তানকে দেব। তার জন্য এটা হবে আরেকটি ট্রফি; যদিও ম্যাচের বল তার বেশি পছন্দ। কিন্তু এই ট্রফিটি বুঝিয়ে দেয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে আমি কী করতে পারি। (বার্সায়) সই করার পর থেকেই এমন রাতের স্বপ্ন দেখেছি—গোল করব এবং এই ম্যাচগুলো খেলে পার্থক্য গড়ে দেব।’
রাফিনিয়ার প্রশংসা করে বার্সা কোচ হান্সি ফ্লিক বলেছেন, ‘দল যেভাবে খেলে, রাফিনিয়া তার খুব ভালো উদাহরণ আমার কাছে। সে অনুশীলন ও ম্যাচে নিজের সর্বস্ব দেয়। আমাদের জন্য সে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
সর্বশেষ ২০১৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে বার্সা। এবার শিরোপা জয়ে কাতালান ক্লাবটি ফেবারিট কি না, সেই প্রশ্নে ফ্লিক বলেছেন, ‘একটু আগেভাগেই (ফেবারিট) বলা হয়ে যায়। আমরা শুধু মৌসুমটা শুরু করেছি। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগে সামনে এখনো লম্বা পথ। আমরা ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে চাই।’
২০০৮-০৯ মৌসুমে বায়ার্নকে ৪-০ গোলে হারিয়েছিল পেপ গার্দিওলার বার্সা। ২০১৪-১৫ মৌসুমেও বায়ার্নের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতেছিল লুইস এনরিকের বার্সা। দুবারই ‘ট্রেবল’ জিতেছিল কাতালান ক্লাবটি।
এআর