ঢাকা: দীর্ঘ ৯ বছর পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতল পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টের ভাগ্য গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিন শেষেই নির্ধারিত হয়েছিল।
প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ২৬৭ রানের বিপরীতে ৩৪৪ রান করে ৭৭ রানে এগিয়ে যায় পাকিস্তান। দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিংয়ে নেমে ২৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে ইংলিশরা।
৫৩ রানে এগিয়ে থাকা পাকিস্তান তখনই জয়ের সুবাস পেতে থাকে। পাকিস্তানের দুই স্পিনার নোমান আলী ও সাজিদ খানের দাপট সামলে ইংল্যান্ড ইনিংস ব্যবধানের হার এড়াতে পারে কিনা, সে প্রশ্নটাও জাগতে থাকে তখন।
সফরকারীরা অবশ্য ইনিংস ব্যবধানের হার এড়িয়েছে। নোমান-সাজিদের ঘূর্ণি সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে ১১২ রান করে ইংল্যান্ড। তাতে জয়ের জন্য পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় মোটে ৩৬ রান।
এ রান তাড়ায় তৃতীয় ওভারেই ওপেনার সাইম আইয়ুবকে হারালেও অধিনায়ক শান মাসুদের ৬ বলে ২৩ রানের ঝড়ে ৯ উইকেটের জয় পায় পাকিস্তান। একইসঙ্গে সিরিজটাও ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নিল স্বাগতিকরা।
মুলতানে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংলিশদের সবগুলো উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন সাজিদ-নোমান। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ উইকেটই শিকার করেছেন দুজনে। প্রথম ইনিংসের বাকি উইকেটটিও পেয়েছেন আরেক স্পিনার জাহিদ মাহমুদ।
এ নিয়ে টেস্টে চতুর্থবারের মতো প্রতিপক্ষের সবগুলো উইকেট বাগিয়ে নিলেন পাকিস্তানি স্পিনাররা। যার দুটি ঘটনাই এবারের ইংল্যান্ড সিরিজে। এছাড়া টেস্টে এই প্রথমবারের মতো কোনো পেসারের হাতে বল তুলে দেয়নি পাকিস্তান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে ধসিয়ে দেওয়ার পথে নোমান ৬ উইকেট পেয়েছেন। তবে এ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন সাজিদ। এতে মোহাম্মদ জাহিদ (১১ উইকেট, ১৯৯৬) ও হাসান আলীর (১০ উইকেট, ২০২১) পর রাওয়ালপিন্ডিতে তৃতীয় বোলার হিসেবে এক টেস্টে অন্তত ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন।
আজ দিনের শুরুতে জো রুট ও হ্যারি ব্রুক যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল, ইংল্যান্ড বোধহয় ঘুরে দাঁড়াবে। ৩ উইকেটে ২৪ রানে দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের উইকেট সংখ্যা অপরিবর্তিত রেখে রান ৬৬তে নিয়ে গিয়েছিলেন দুজনে।
কিন্তু ইনিংসের ২০তম ওভারে হ্যারি ব্রুককে (২৬) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নোমান। ছয়ে নামা স্টোকসকে (৩) থিতু হওয়ার আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরান নোমান।
জেমি স্মিথও (৩) দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ইংলিশদের আশা ভরসার প্রতীক রুটও ফিরে যান দলীয় ৮৫ রানে। এরপর বাকিরা কেবল উইকেটে গেছেন আর ফিরেছেন। গুস অ্যাটকিনসন(১০), রেহান আহমেদদের (৭) ফিরতে বাধ্য করেছেন সাজিদ খান। শেষ ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচকে (১০) স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ইংল্যান্ডকে ১১২ রানে আটকে দেন নোমান।
ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচে এটাই দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। আর তাতে ৩৬ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় পাকিস্তানের। সেটি পেরোতে মাসুদদের লেগেছে মোটে ৩.১ ওভার! অধিনায়ক শান মাসুদ করেন ৬ বলে ২৪ রান।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :