ঢাকা: বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচটি মাঠে বসে দেখেছেন আমিনুল ইসলাম (বুলবুল)। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আমন্ত্রণে শারজাহতে গিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
অনেক দিন ধরেই আইসিসির ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত সাবেক এই ক্রিকেটার ম্যাচ শেষে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “জয়-পরাজয় তো থাকতেই পারে, কিন্তু অধিনায়কত্ব আর ব্যাটিং পরিকল্পনা দেখে সত্যিই বিস্মিত হয়েছি।
সবকিছুই যেন ক্লান্ত দেখাচ্ছিল-শরীরী ভাষা, বলের প্রতি মনোযোগ, প্রি-বল রুটিন, পুরোটা মিলিয়ে পরিকল্পনা খুবই দুর্বল মনে হয়েছে।”
ম্যাচটি যারা দেখেছেন, আমিনুলের সঙ্গে দ্বিমত করার লোক খুব কমই পাওয়া যাবে। তবে নাজমুল হোসেন শান্তর দাবিটা একটু ভিন্ন। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে টসের সময় তিনি বলেছেন, প্রস্তুতি খুব ভালো হয়েছে তাদের। ম্যাচ শেষেও তিনি বলেছেন একই কথা। বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, দিনটি তাদের পক্ষে ছিল না।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এই ম্যাচে বুধবার আফগানদের কাছে ৯২ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। টস হেরে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ দারুণ বোলিংয়ে প্রবল চাপে ফেলে দিয়েছিল আফগানিস্তানকে। কিন্তু বিপর্যয় সামলে তারা ২৩৫ রান পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
শান্ত বললেন, বোলিংয়ের শুরুটা ভালো করলেও পরের দিকে খেই হারিয়ে ফেলেছেন বোলাররা। কৃতিত্ব দিলেন তিনি আফগানদের উদ্ধার করা দুই ব্যাটসম্যানকেও।
'আমাদের শুরুটা ভালো হয়েছিল। প্রথম ১৫-২০ ওভার আমরা খুবই ভালো বোলিং করেছি। তবে মাঝের সময়টায় আমরা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারিনি আমরা। উইকেটে বাউন্স ছিল নিচু। আমাদের কেবল প্রয়োজন ছিল লম্বা সময় ধরে সঠিক জায়গায় বল রেখে যাওয়া।'
'পাশাপাশি নাবি যেভাবে ব্যাট করেছেন… তিনি দুর্দান্ত খেলেছেন। হাশমাত ও শাহিদি দারুণ ব্যাট করেছেন।'
৩৫ রানে ৪ ও পরে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল আফগানিস্তান। ষষ্ঠ উইকেটে ১০৪ রানের জুটি গড়েন হাশমাতউল্লাহ শাহিদি ও মোহাম্মাদ নাবি। ৫২ রানে আউট হন আফগান অধিনায়ক শাহিদি। ৪০ ছুঁইছুঁই বয়সের নাবি ৭৯ বলে করেন ৮৩।
রান তাড়ায় একসময় জয়ের সম্ভাবনা ভালোভাবেই জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান দ্রুত ফিরলেও দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারের (৩৩) সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটিতেও অর্ধশত পার হয়ে যায় বাংলাদেশ অধিনায়কের।
এরপরই ছন্দপতন। সেখানে শান্ত কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নিজেকেই।
'আমার মনে হয়, আমার উইকেটই আজকের ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। কারণ আমি থিতু হয়ে গিয়েছিলাম। এছাড়া মিরাজ, সৌম্য, আমরা ৩০-৪০ রান করে আউট হয়েছি। এই ধরনের কন্ডিশনে আরও লম্বা সময় ব্যাট করা প্রয়োজন ছিল। আজকের ব্যাটিংয়ে এটিই ছিল মূল সমস্যা।'
৪৭ রান করে শান্তর বিদায়ের একটু পর মিরাজ ফেরেন ২৮ রান করে। ভয়াবহ ধসে এরপর ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। ২ উইকেটে ১২০ রানে থাকা দল গুটিয়ে যায় ১৪৩ রানেই!
বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেওয়ার আফগান নায়ক আল্লাহ মোহাম্মাদ গাজানফার। ১৮ বছর বয়সী স্পিনার ৬ উইকেট নেন ২৬ রানে। এর মধ্যে শেষ স্পেলে ৫ উইকেট শিকার করেন কেবল ৪ রান দিয়ে।
গাজানফার ও আফগান বোলারদের জন্য বিশেষ প্রশংসা শোনা গেল শান্তর কণ্ঠে। 'আফগানিস্তানের সবসময়ই অনেক রহস্য-স্পিনার থাকে। তবে তাদের সবাই খুব ভালো বল করেছে, বিশেষ করেই ওই ছেলেটি (গাজানফার) সত্যিই ভালো করেছে।'
পরের ম্যাচের প্রত্যাশার প্রসঙ্গে শান্ত বললেন, প্রস্তুতির ঘাটতি তিনি দেখেন না। সিরিজে ফেরার আশাও তার প্রবল।
“প্রস্তুতি দুর্দান্ত ছিল আমাদের, আজকের দিনটি আমাদের ছিল না। আশা করি, পরের ম্যাচে আমরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।” সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচটি শনিবার। ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায়।
এআর