• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

‘মাইনাস ইন্ডিয়া’র কথা ভাবছে পাকিস্তান, হবে বয়কটও


ক্রীড়া ডেস্ক নভেম্বর ১১, ২০২৪, ০৩:১১ পিএম
‘মাইনাস ইন্ডিয়া’র কথা ভাবছে পাকিস্তান, হবে বয়কটও

ঢাকা: চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নিতে পাকিস্তানে যাবে না ভারত। সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে ভারত সরকার। এ খবরে ক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। 

মহসিন নাকভির নেতৃত্বাধীন বোর্ড ভারতকে ছাড়াই আগামী বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজনের কথা ভাবছে। শুধু তা-ই নয়, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে কোনো টুর্নামেন্টে না খেলার মতো কঠোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হচ্ছে।

পাকিস্তান সরকার ও পিসিবির সূত্রে এসব খবর দিয়েছে দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাকিস্তানে হওয়ার কথা রয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আট দলের এই টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণা করার কথা ছিল আজ। তবে ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পর তা স্থগিত করা হয়েছে।

পিসিবি সূত্রে সামা টিভি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ভারত সরকার পাকিস্তানে দল পাঠানো নিয়ে একগুঁয়েমি অবস্থান ধরে রাখায় আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ‘মাইনাস ইন্ডিয়া’ ফর্মুলার কথা ভাবা হচ্ছে।

ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই পাকিস্তানে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্তটি জানিয়েছে আইসিসিকে ই–মেইল পাঠিয়ে। পরে আইসিসি জানিয়েছে পিসিবিকে। এখন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও আইসিসির মাধ্যমে ভারতকে ছাড়া টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে।

আইসিসি ক্রিকেটের বৈশ্বিক সংস্থাই নয়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিরও মূল কর্তৃপক্ষ। ভারত সরকার গত মাসে ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটিতে (আইওসি) চিঠি পাঠিয়েছে। পাকিস্তান এর বিরোধিতা করবে।

পাকিস্তানের আরেক সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে যেকোনো মঞ্চে ক্রিকেট ম্যাচ না খেলার অবস্থান নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান। সরকারের অবস্থান বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে, এমন ব্যক্তিদের একজন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কোনো টুর্নামেন্টেই আমরা ভারতের সঙ্গে খেলব না, যতক্ষণ না ওরা পাকিস্তানে এসে খেলতে চাইবে।’

ভারতকে ছাড়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে কিংবা ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে কোনো টুর্নামেন্টে মুখোমুখি না হলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে পাকিস্তান। কারণ, সম্প্রচার স্বত্ত্বসহ আইসিসির আয়ের বড় অংশই আসে ভারতের বাজার থেকে।

তবে পিসিবির কর্মকর্তারা মনে করছেন, ভারতের সঙ্গে ম্যাচ বয়কট করলে ক্ষতি শুধু পাকিস্তানেরই হবে না, ভারতেরও হবে। যে কোনো টুর্নামেন্টে উত্তেজনার পারদ বাড়াতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচই মূখ্য ভূমিকা রাখে। শুধু ভারত নয়, ক্রিকেট-বাজারে পাকিস্তানেরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হিস্যা আছে।

ভারতের ক্রিকেট দল পাকিস্তানে সর্বশেষ খেলেছে ২০০৮ সালে। আর দুই দলের মধ্যে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হয়েছে ২০১২-১৩ সালে, ভারতের মাটিতে। এরপর এক দশকের বেশি সময় ধরে আইসিসি ও এসিসির ম্যাচ ছাড়া ভারত-পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি।

২০২৩ এশিয়া কাপের আয়োজক ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সরকার সে দেশে দল পাঠাতে রাজি না হওয়ায় টুর্নামেন্টটি ‘হাইব্রিড মডেলে’ পাকিস্তানের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাতেও অনুষ্ঠিত হয়।

ভারত সরকার ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও হাইব্রিড মডেলে আগ্রহী। এ ক্ষেত্রে ভারতের ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলতে চায় তারা। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এ দফায় আর রাজি নয়। গত বছর ভারতের অনড় অবস্থানের কারণে পুরো এশিয়া কাপ আয়োজন করতে না পারলেও বছরের শেষ দিকে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে ঠিকই দল পাঠানো হয়েছিল, এখন আর কোনো আপস নয়-এমন অবস্থানই নিয়েছে পিসিবি।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, ভারত ক্রিকেট দলের পাকিস্তানে খেলতে না আসার সিদ্ধান্তে পাকিস্তান সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে। এর মধ্যে আছে আইনি ব্যবস্থা এবং অলিম্পিক গেমসও। ভারত সরকার গত মাসে ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটিতে (আইওসি) চিঠি পাঠিয়েছে। 

পাকিস্তান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভারত সরকারের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ইভেন্টকে রাজনীতিকরণ নিয়ে আইওসির কাছে বক্তব্য তুলে ধরবে তারা।

এআর

Wordbridge School
Link copied!