ঢাকা: আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে পর্দা ওঠার কথা আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম সংস্করণের। তবে ভারতের অস্বীকৃতির কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে বেশ বিপাকে পাকিস্তান।
এর আগে আজ ১৯ নভেম্বর সূচি প্রকাশের শেষ দিন। কিন্তু সূচি প্রকাশ তো দূরের কথা, আয়োজন নিয়েই এখনো সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি পাকিস্তান।
নিরাপত্তাকে কারণ দেখালেও সিদ্ধান্তটা যে রাজনৈতিক, এটা কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ‘হাইব্রিড মডেলে’ কিংবা পাকিস্তানের বদলে অন্য কোনো দেশে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সরিয়ে নেওয়ার আলোচনাও হচ্ছে।
পাকিস্তান আবার হুমকির সুরে জানিয়ে দিয়েছে, তেমন কিছু হলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি বর্জন করবে তারা, পাশাপাশি আইসিসির আর কোনো টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে খেলবে না।
এমন অবস্থায় নতুন বোমা ফাটিয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেট বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ক্রিকেট পাকিস্তান। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি উল্লেখ করেছে, পাকিস্তানের মাটিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে না যেতে অন্য দল ও বোর্ডগুলোকে প্রভাবিত করছে ভারত। এজন্য আর্থিকসহ লোভনীয় অনেক প্রস্তাবও ভারত দিচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় সে প্রতিবেদনে।
‘গোপন সূত্রে’র মাধ্যমে পাওয়া তথ্য জানিয়ে ক্রিকেট পাকিস্তানের দাবি, জনসম্মুখে বিসিসিআইয়ের পাকিস্তান বিরোধিতার কারণ হিসেবে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলা হলেও এর মূল কারণ আলাদা। টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড মডেলে বা ভেন্যু সরিয়ে পাকিস্তান থেকে ভারতে নিতে অন্যান্য বোর্ডগুলোর সমর্থন আদায়ে গোপনে কাজ করছে বিসিসিআই।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আইসিসির রাজস্ব থেকে বিসিসিআই যে ভাগ পায়, বোর্ডগুলো ভারতের প্রস্তাবে রাজি হলে সে রাজস্ব আয়ের একটা বড় অংশ দলগুলোকে দেবে বিসিসিআই। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আর্থিক প্রণোদনা এবং ভবিষ্যতে ভারতের বিপক্ষে দলগুলোকে আরও বেশি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে বিসিসিআই- এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে ক্রিকেট পাকিস্তানের প্রতিবেদনে।
ভারত ‘গোপনে’ যত পরিকল্পনাই করুক, পাকিস্তান তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। পিসিবি হাইব্রিড মডেলে সম্মত হয়নি। সাফ জানিয়ে দিয়েছে, টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচ পাকিস্তানের মাটিতেই হতে হবে। পিসিবির কর্মকর্তারা বিসিসিআই ও আইসিসিকে এটাও জানিয়েছে, যদি ভারত পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে রাজি না হয়, সেক্ষেত্রে ভারতের পরিবর্তে র্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে থাকা কোনো দলকে অন্তর্ভুক্ত করে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চায় তারা। এক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের সময়সীমা আরও এগিয়ে আনার পরামর্শও দিয়েছে পিসিবি।
এদিকে বিসিসিআইয়ের এই পাকিস্তানবিরোধী অবস্থানের নানা অসংগতি তুলে ধরেছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকেরা। তারা যুক্তি দিচ্ছেন, ২০২১ সালে তৎকালীন পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজার মেয়াদকালে পাকিস্তান যখন আয়োজক হওয়ার জন্য বিড করেছিল, তখন ভারত তাদের সমর্থন দিয়েছিল। পাকিস্তানে যাওয়া নিয়ে তাদের অনাপত্তির কথা ভারত এর আগে কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। কিন্তু হঠাৎ এ বিরোধিতার পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে থাকতে পারে বলে ভাবছেন বিশ্লেষকেরা- এমনটাই জানিয়েছে ক্রিকেট পাকিস্তান।
এআর