ঢাকা : নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ইনজুরিতে পড়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়ক হিসেবে নিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি সুখকর ছিল না। খুবই বাজে ভাবে হেরে যায় বাংলাদেশ।
তবে দ্বিতীয় টেস্টে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিস্মরণীয় জয় তুলে নিলেন টাইগাররা, সেটি অধিনায়ক মিরাজের জন্য বড় এক প্রাপ্তি বলতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর মিরাজ বললেন, এটি তার জন্য বড় একটি অর্জন।
তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। প্রথম ম্যাচে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিততে পেরেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অর্জন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটি পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ক্রিকেটাররা সবাই খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছে। সবাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। এজন্য কৃতিত্ব দিতে চাই সব ক্রিকেটারকে। আমি যেভাবে পরামর্শ দিয়েছি, সবাই মেনে নিয়েছে। এজন্য আমার কাছে খুব ভালো লাগছে।’
মুশফিক ও শান্তকে ছাড়া টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামলেও খেলোয়াড়দের মধ্যে জয়ের তাড়না ছিল। জয়ের জন্য মুখিয়ে ছিলেন টাইগাররা। আর সেটিই মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেল। মিরাজ বলেন, ‘যেহেতু এই কন্ডিশন খুব সহজ ছিল না, প্রতিটি ক্রিকেটারের জন্য অনেক কঠিন ছিল, সবাই মানসিকতা এ রকম করে নিয়েছিল যে, ম্যাচটা জিততে হবে। সবাই মন থেকে চেয়ে ম্যাচটি জেতার জন্য। এজন্যই আমরা জিততে পেরেছি।’
নিজের দ্বিতীয় ইনিংসে আগ্রাসী ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। মিরাজ জানালেন, দলের পরিকল্পনাই ছিল এটি।
তিনি বলেন, ‘যখন আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছি, তার আগে নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি।
বিশেষ করে, আমি একটা কথা বলেছিলাম যে, এই উইকেটে ইতিবাচক ছাড়া খেললে অনেক কঠিন। যেহেতু আমরা লিড পেয়েছি ১৮ রানের, আমাদের জন্য রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ।
জানতাম যে, এই উইকেটে আড়াইশর বেশি করতে পারলে আমাদের জন্য ম্যাচটা জেতা সহজ হবে।’
অসুস্থতার কারণে ব্যাটিং করার মতো অবস্থায় ছিলেন না মুমিনুল হক। তার তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ের জন্য বিকল্প বের করতে হয়েছে। মিরাজ খুবই দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, সতীর্থদের উজ্জীবিত করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে মিরাজ বলেন, ‘বার্তাটা তাই এই ছিল যে, ইতিবাচক খেলতে হবে। সৌরভ ভাই (মুমিনুল) অসুস্থ হয়ে পড়ার পর দলের সবাই একটু পাজলড হয়ে যাচ্ছিল, কারণ ওই জায়গাটায় ব্যাট করা কঠিন। দিপুকে (শাহাদাত হোসেন) আমি বলেছিলাম, ও রাজি হয়েছে (তিনে খেলতে)। ওকে একটা কথা বলেছিলাম যে, ‘এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক ব্যাটিং করো। প্রথম বলটিই মারার মতো পেলে মেরে দাও। কেউ তোমাকে কিছু বলবে না।’
ওইভাবেই খেলেছে ও, ওর ২৮ রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি যখন চার নম্বরে গেলাম, একই মানসিকতা নিয়ে খেললাম। কারণ এই উইকেট রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং ক্রিকেটারদের প্রতি এই বার্তা ছিল যে, একটি রানও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি ব্যাটসম্যান যেন রানের জন্য খেলে। আমরা এই পরিকল্পনাতেই খেলেছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ২০১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ফলে পরের ম্যাচে ফেরা কঠিন ছিল। সেই কাজটিই করে দেখিয়েছেন মিরাজরা।
এমটিআই