• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্যাট কেনার টাকা ছিল না, সেই ছেলেই এখন চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক


ক্রীড়া ডেস্ক ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ০৩:৫৮ পিএম
ব্যাট কেনার টাকা ছিল না, সেই ছেলেই এখন চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক

ঢাকা: অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। 

দলকে শিরোপা জেতাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া তামিমের নিজ শহর যশোরেও বইছে আনন্দের বন্যা।  বারান্দিপাড়া এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ হুসাইন ও গৃহিণী সুলতানা পারভীন দম্পতির সন্তান। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট।

যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী তামিমের বাবা যশোর আমিনিয়া কামিল মাদ্রাসার শিক্ষক কাজী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘তামিম দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের। তামিমের ক্রিকেট সরঞ্জামের টাকার জোগান দেওয়া অনেক কঠিন ছিল। ক্রিকেট খেলার সামগ্রীর অনেক দাম। সব সময় ছেলেকে কিনে দিতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘একটা ব্যাটের জন্য তামিম একবার বায়না করেছিল। তখন তাকে নিয়ে খেলাঘরে গেলাম। একটি ব্যাট ছেলে পছন্দ করল। ওই ব্যাটের দাম আট হাজার টাকা। তখন ওই টাকা আমার কাছে ছিল না। ছেলের চোখে পানি দেখে বাকিতে ব্যাট কিনে দিয়েছিলাম।’ 

তিনি বলেন, ‘ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার নেশায় প্রথমে কিছুটা হতাশ হই। পরে তার সাফল্য আর একাগ্রতা দেখে তার পেছনে টাকা খরচ করতে শুরু করি। তার কষ্ট আর দেশবাসীর দোয়ায় সে ভালো অবস্থানে গেছে।’

পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন তামিম। চার ইনিংসে ১১২ গড় ও ৮৪.৮৫ স্ট্রাইক রেটে ২২৪ রান করেন তিনি। একটি সেঞ্চুরি, দুটি হাফ সেঞ্চুরি।

তার ভাই আবু হুরাইরা বলেন, ‘তামিমের আদর্শ সাকিব আল হাসান। বাবার পছন্দের ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। এজন্য ছেলের নাম রাখেন তামিম।’

তিনি বলেন, ‘তামিম যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ঢাকার বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েও যেতে পারেনি। রাতে ঘুমানোর সময়ও কোলবালিশের পরিবর্তে ব্যাট জড়িয়ে ধরে থাকত।’

তার মা সুলতানা পারভীন চেয়েছিলেন ছেলে চিকিৎসক হয়ে গরিব-দুঃখী মানুষের সেবা করবে। তবে এখন ছেলের সাফল্যে গর্বিত।

তিনি বলেন, ‘তার খেলার সরঞ্জাম কিনে দিতে পারতাম না। তার আগ্রহ দেখে ধার করে কিনে দিয়েছি। রান্নায় দেরি হলে দুপুরে না খেয়ে প্র্যাকটিসে যেত। তার ভাইকে দিয়ে মাঠে খাবার পাঠাতাম।’

তিনি বলেন, ‘আগে ক্রিকেট বুঝতাম না। ছেলের জন্য ক্রিকেট দেখে এখন কিছুটা বুঝি। আমার তামিম এখন বাংলাদেশের গর্ব; ছেলের সাফল্যে আমি গর্বিত। স্বপ্ন দেখি, ছেলে জাতীয় দলে সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে সুনাম বয়ে আনবে।’

যশোর ক্রিকেট কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের যশোরের প্রশিক্ষক আজিজুম হক আজিম বলেন, ‘আমার ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে ক্রিকেটে তামিমের হাতেখড়ি। সে খুব ভালো খেলোয়াড়। তার সবচেয়ে ভালো গুণ হলো, সে কথা শোনে। খেলার প্রতি মনোযোগী। সে একদিন বড় ক্রিকেটার হবে।’

এআর

Wordbridge School
Link copied!