ঢাকা: এনসিএল টি-টোয়েন্টির রাউন্ড রবিন লিগে রানের দেখা মিলেছিল বটে। কিন্তু প্লে-অফে একদমই বিপরীত চিত্র।ফাইনালে তো ব্যাটারদের আরও করুণ অবস্থা। প্রথমে ব্যাট করে ৬২ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকা মেট্রো। পরে তা পাড়ি দিতে গিয়েও ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে রংপুর বিভাগ। শেষ পর্যন্ত ৫২ বল হাতে রেখে এনসিএল টি-টোয়েন্টির চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ-আলাউদ্দিন বাবুর পেস তান্ডবে লণ্ডভণ্ড হয় ঢাকা মেট্রোর ইনিংস। ১৬.৩ ওভারে ৬২ রানের বেশি করতে পারেনি নাইম শেখের দল। এনসিএল টি-টোয়েন্টির এবারের আসরে যা ছিল যেকোনো দলের সর্বনিম্ন সংগ্রহ।
এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ধুঁকেছে রংপুরও। যদিও শেষ পর্যন্ত শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে তাদের। ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। দলটির প্রথম তিন ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি। ২ রান করা ওপেনার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ফেরান আলিস আল ইসলাম। মামুন মিড অনে ক্যাচ দেন রাকিবুল হাসানের হাতে। দুই বল পর অভিজ্ঞ ব্যাটার নাইম ইসলামও আউট হয়েছেন মিস্ট্রি স্পিনারের আলিসের শিকার হয়ে।
উইকেটের পেছনে ইমরাউজ্জামানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি শূন্য রানে। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ফিরেছেন ৯ রান করে। রংপুরের এই ব্যাটারকে এলবিডব্লিউ করে আউট করেছেন আবু হায়দার রনি। পরের বলেই অধিনায়ক আকবর আলী আউট হয়েছেন শূন্য রানে। তিনি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে তাহজিবুল ইসলামের দারুণ ডিরেক্ট থ্রোতে ফেরেন রান আউট হয়ে।
আরিফুল হক একটি ছক্কা ও চার মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে তার ইনিংসও বড় হয়নি। ব্যক্তিগত ১৪ রানে তিনি বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দিয়েছেন আলিসের হাতে।
এরপর রংপুরকে আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি অভিজ্ঞ তানবির হায়দার ও এনামুল হক। দুজনের ২৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রংপুর। তানবির ৮ ও এনামুল ১৪ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই ইমরানউজ্জামানের উইকেট হারায় মেট্রো। ইনিংসের প্রথম বলেই ডিপ কাভারে ক্যাচ তুলে দেন এই ওপেনার। তার ব্যাটে আসে তিন বলে চার রান। পরের ওভারে নাইম শেখের উইকেট হারায় মেট্রো।
আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক নাইম এ দিন ফিরে যান শূন্য রানে। আলাউদ্দিনের অসাধারণ ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষক আকবরের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। মেট্রো অধিনায়কের পতনের পর আবারও বিপদে পড়ে মেট্রো।
মুগ্ধর করা তৃতীয় ওভারে আরও দুটি উইকেট হারায় গ্রুপ পর্বে টানা সাত ম্যাচ জেতা দলটি। ওভারের চর্তুথ বলে আনিসুলকে বোল্ড করেন মুগ্ধ। এরপরে উইকেটে এসে প্রথম বলেই ক্যাচ আউট হন আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
গুড লেংথের সুইং করা বলটা না বুঝেই ব্যাটার কানায় লাগিয়ে সেকেন্ড স্লিপে ক্যাচ তুলে সাজঘরের পথ ধরেন বিপ্লব। পাওয়ার প্লে'র মধ্যে গাজী মোহাম্মদ তাহজিবুল ইসামের উইকেটও হারায় দলটি। দুই রান করা তাহজিবুলকে বোল্ড করেন আসরের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক আলাউদ্দিন।
১৬ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ম্যাচ থেকে তখনই ছিটকে যায় মেট্রো। দশম ওভারে শামসুর রহমান শুভ বিদায় নিলে বড় স্কোরের স্বপ্নটা ধুসর হয়ে যায় মেট্রোর। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানের বলে উইকেটরক্ষক আকবরকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৪ রান করা শুভ।
এরপরের ওভারে ফিরে যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। রবিউল হকের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ১৫ বলে ৬ রান করেন তিনি। শেষদিকে আবু হায়দার রনির নয় বলে ১৩ রানের ইনিংসে পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় মেট্রো।
রংপুরের বোলারদের মধ্যে ১২ রান খরচায় তিনটি উইকেট নেন মুগ্ধ। সমান ১২ রান খরচায় তিনটি উইকেট নেন বাবু। এ দিন মোট ৬৬টি ডট বল দেন রংপুরের বোলাররা। মুগ্ধ ১৬টি, বাবু ও রবিউল দেন ১৪টি করে ডট বল।
এআর