ঢাকা: জাতিসংঘ তালিকাভুক্ত দেশের সংখ্যা ১৯৩ ভ্রমণ করেছেন। ইচ্ছা আছে আরও ৭টি দেশ ভ্রমণের। দেশগুলো ভ্রমণ করতে সময় নিয়েছেন ৫০ বছর। নিজের টাকা ব্যয় করে এসব দেশে ভ্রমণে গেছেন তিনি। নাম তার লুইসা ইউ। নিজের ৭৯ বছর বয়সে সদ্যসমাপ্ত বছরের নভেম্বরের ৯ তারিখ সার্বিয়ায় পা রাখার মাধ্যমে এ যাত্রা শেষ করেছেন তিনি।
লুইসার জন্ম ১৯৪৪ সালে ফিলিপাইনে। ১৯৬৭ সালে ২৩ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে। দেশটিতে এসে লেখাপড়ার পাশাপাশি ভ্রমণের নেশা চাপে তার মাথায়। তিন বছর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪৫টি অঙ্গরাজ্য ভ্রমণ শেষ হয় তার। ‘দেখব এবার জগৎটাকে’- এমন স্বপ্নে বিভোর লুইসা এরপর বের হন বিশ্বভ্রমণে।
১৯৭০ সালে প্রথম দেশ হিসেবে জাপান ভ্রমণে যান লুইসা। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ফিরে আসেন। বিভিন্ন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। উদ্দেশ্য বিশ্ব ভ্রমণের। এর জন্য তো অর্থের প্রয়োজন। নিজে উপার্জন না করলে কে দেবে তাকে টাকা। এভাবে কাজ করে টাকা জমিয়ে বিগত ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত ১৯৩টি দেশ ভ্রমণ সম্পন্ন করেছেন লুইসা। সর্বশেষ পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন নার্সিং। সেটাও ছেড়ে দেন। এর পর প্রপার্টি ইনভেস্টমেন্ট তথা বিভিন্ন সম্পত্তিতে বিনিয়োগ শুরু করেন। সেখানে যে আয় হয় তা দিয়ে দিব্যি একজনের ঘুরতে যাওয়ার খরচ উঠে আসে। বয়সে বৃদ্ধ কিন্তু আদতে যৌবনা মানুষটির বর্তমান নিবাস যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি অঙ্গরাজ্যে।
লুইসা ইউ বিশ্বের সব দেশ ঘুরেছেন। দেখেছেন এসব দেশের প্রকৃতি, জেনেছেন সংস্কৃতি সম্পর্কে, বন্ধু বানিয়েছেন স্থানীয় মানুষদের। এত দেশের নামের মধ্যে ভালোলাগার দেশগুলো জানতে চাইলে লুইসা জানান, তার প্রিয় তিন দেশ হলো নিজ দেশ ফিলিপাইন, ইতালি ও থাইল্যান্ড।
এত বছর ধরে কীভাবে নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটেছেন তিনি, কী ছিল তার অনুপ্রেরণা জানতে চাইলে লুইসা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘স্বপ্ন দেখা থামালে চলবে না। স্বপ্ন দেখে যেতে হয়। আমি ঘুরতে চেয়েছি, সেই চেষ্টা ছিল তাই আমি সফল হয়েছি।’
তরুণ ভ্রমণপিপাসুদের উদ্দেশে লুইসা বলেন, ‘কারও জন্য অপেক্ষা না করে বেরিয়ে পড়ো। কারণ তুমি যদি কারও জন্য অপেক্ষা করো তাহলে থেমে যাবে, তোমার এগিয়ে যাওয়া আটকে যাবে।’
আর কিছুদিনের মধ্যে ৮০ বছরে পা দিতে যাওয়া লুইসা দীর্ঘ সাধনা, অধ্যবসায় আর পরিশ্রমে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন, অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ করেছেন নিজেকে। নিজ দেশ এবং বিভিন্ন দেশের মানুষের ভালোবাসাও পেয়েছেন অনেক। অর্জন করেছেন বেশ কিছু সম্মানজনক পুরস্কারও। লুইসাকে চেনে এবং জানে যারা, তারা সবাই তাকে ডাকে ‘মামা’।
ইউআর
আপনার মতামত লিখুন :